Showing posts with label খোলা আলোচনা. Show all posts
Showing posts with label খোলা আলোচনা. Show all posts

কয়েকটি ওপেন সোর্স লাইসেন্সের পরিচিতি

Open source Initiative. Approved Licenseনিজেদের কাজকে ওপেন সোর্স হিসেবে প্রকাশ করতে চায়, এমন ডেভেলপারের সংখ্যা দিনে দিনে অনেক বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ হয়তো এর ব্যতিক্রম। কিন্তু উন্নত বিশ্বের ডেভেলপার, প্রোগ্রামারদের মানসিকতা উন্নতই হয়ে থাকে। ওপেন সোর্সের পক্ষের প্রোগ্রামাররা আশা করে তাদের কাজকে ভিত্তি ধরে অন্যরা আরও কাজ করুক এবং নিজেদের কাজকেও অন্যদের কাছে মুক্ত করে দিক। তারা চায় স্বত্বাধিকারের বিষয়টিকে আরও সহজবোধ্য করে ফেলা। বর্তমান পৃথিবীতে প্রতিদিন কাজে লাগে এমন সবধরণের প্রোগ্রাম, এপ্লিকেশন ওপেন সোর্সের আওতায় প্রকাশিত হচ্ছে। এপ্লিকেশন থেকে শুরু করে ওয়েব সাইট তৈরির CMS সবকিছুই এখন আর মানুষের হাতের নাগালের বাইরে নেই। যে কেউ যে কোন সফটওয়ারের সোর্সকোড থেকে নিজের মনের মতো করে সবকিছু নতুন করে সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে পারে। তৈরি করে নিতে পারে নিজস্ব কাস্টমাইজ এপ্লিকেশন। প্রচলিত লাইসেন্স এই ওপেনসোর্সের চাহিদাকে পূরণ করতে পারেনা। তাই জন্ম দেয়া হয়েছে বেশ ওপেনসোর্সের নিজস্ব লাইসেন্স। এই লাইসেন্সের নানারকম প্রকারভেদের মধ্যে বিভিন্ন বৈচিত্র্য আছে।

আমরা অনেকেই জানিনা ওপেন সোর্স লাইসেন্স বলতে আসলে কি বোঝায়? ডেভেলপারদের মধ্যেও এ নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। তারা নিজেরাও অনেক সময় নিশ্চিত হতে পারে না যে ওপেন সোর্স লাইসেন্সগুলোর মধ্যে ঠিক কি কি অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে। আর কোন কোন অধিকার রাখা হয়েছে মুক্ত। ফলে নিজেদের কাজের স্বত্ত্ব কিভাবে ধরে রাখা যায়, বা কাজটির উপরে প্রয়োগ করা যায়, সে নিয়ে তারা অনেক সময় বিভ্রান্তিতে ভোগেন।
Discussions on some open source license and similar licenses.
ওপেন সোর্স লাইসেন্স কি?
আসলে ওপেন সোর্স লাইসেন্স বলতে এমন কোন অধিকারকে বোঝায় না, যে আপনি আপনার মেধার সঠিক মূল্যায়ন পাবেন না। এই লাইসেন্সের অধীনে আপনি যদি আপনার কাজটির কোন প্যাটেন্ট করেন, তাহলে তার স্বত্ত্বাধিকার (কপিরাইট) আপনারই থাকবে। মূল কাজের সম্পূর্ণ মালিক আপনিই থেকে যাবেন। অন্য কেউ কাজটিকে নিজের কৃতিত্ব বলে দাবী করতে পারবে না।

ওপেন সোর্স লাইসেন্স আসলে নির্দিষ্ট কিছু কাজের অধিকার অন্যকে দিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে আপনার কাজটি আপনারই থাকছে, কিন্তু কিছু কিছু বিষয় আপনি আর নিজের হাতে রাখলেন না, অন্যকে দিয়ে দিলেন। এতে বিভিন্ন দিক দিয়ে সুবিধা পাওয়া যায়।

সর্বসাধারণের সামনে আপনার কাজটি উন্মুক্ত করে দিয়ে এবং নির্দিষ্ট প্রকারের লাইসেন্সের অধীনে রাখার মাধ্যমে আপনি অন্যকে কাজটি ব্যবহার বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে সতর্ক করে দিতে পারেন। এতে সুবিধা হল, আপনাকে বারবার নির্দিষ্ট কোন প্রকারের অনুমতি বা ডিজাইন পরিবর্তন অথবা ডেভেলপের জন্য বেশি বা অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হল না। আপনি প্রধান ডেভেলপার থেকে যাচ্ছেন, বাকী কাজটুকু অন্যরা করতে পারছে। ওপেন সোর্স লাইসেন্স থাকার মাধ্যমে বরং আপনি অন্যকে আপনার কাজে সহায়ক হিসেবে অংশগ্রহণ করার অনুমতি দিয়ে দিলেন। আর এর ফলে আপনি নুন্যতম সম্মানটুকু অন্তত পেতে পারেন। এছাড়াও ওপেন সোর্স লাইসেন্স অন্য কাউকে আপনার কষ্ট করে করা কাজটিকে নিজের বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টায় বাধা দিবে।

সংক্ষেপে এই হল ওপেন সোর্স লাইসেন্স। এর কয়েক রকমের প্রকারভেদ আছে। আসুন আমরা একে একে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।

GNU General Public License
বিভিন্ন ওপেন সোর্স প্রোজেক্টগুলোতে GNU General Public License (GPL) সবচাইতে বেশি ব্যবহৃত হয়। ওপেন সোর্স প্রোজেক্টে অংশ নেয়া ডেভেলপারদের কাজে এই GPL একটু বেশি অধিকার ও সম্মান দিয়ে থাকে। সংক্ষেপে GPL অন্যকে আইনগতভাবে কপি, বিতরণ এবং উন্নয়ন করার অধিকার দেয়। এগুলো আর একটু বিস্তারিতভাবে যেভাবে রয়েছে তা হলঃ

অনুলিপি তৈরি করাঃ নিজস্ব সার্ভারে, গ্রাহক (ক্লায়েন্ট) এর সার্ভারে, নিজের কম্পিউটারে অর্থাৎ যে কোন জায়গায় আপনি মূল সফটওয়ারটির অনুলিপি তৈরি বা কপি করতে পারবেন। কত সংখ্যক কপি করতে পারবেন তার কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই।
বিতরণঃ নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগে ডাউনলোড লিংক রাখা। পেনড্রাইভ বা সিডিতে কপি করে যতগুলো খুশি যাকে খুশি আপনি বিতরণ করতে পারবেন। সফটওয়ারের সোর্স কোড কাগজে প্রিন্ট করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিন না কেন, তাতে কারও কোন যায় আসবে না।
টাকা নেয়াঃ আপনি ক্লায়েন্টকে GPL লাইসেন্সযুক্ত সফটওয়ারটি দিতে টাকা নিতে পারেন। কিন্তু আপনি যে কোনভাবেই বা যে কোন উদ্দেশ্যেই টাকা নিননা কেন, তার নির্দিষ্ট কারণ ও সফটওয়ারের GPL লাইসেন্সটি ক্লায়েন্টকে জানাতে হবে। ক্লায়েন্টকে জানাতে হবে যে তিনি ইচ্ছা করলে এই প্রোগ্রামটি বিনে পয়সাতেও পেতে পারতেন।
পরিবর্তন- পরিমার্জনঃ আপনার যেমন খুশি তেমনভাবে সফটওয়ারটির পরিবর্তন করতে পারবেন। ইচ্ছে করলে নতুন কিছু যোগ করতে পারবেন, কিংবা আপনার কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হওয়া কোন অংশ বাদ দিতে পারবেন। যদি কাজটির কোন অংশ অন্য কোন প্রোজেক্ট তৈরিতে বা উন্নয়নে ব্যবহার করেন, তাহলে অবশ্যই সেটা GPL এর অধীনে প্রকাশ করতে হবে।

GNU Lesser General Public License
এই লাইসেন্স GPL থেকেই আসা। কিন্তু এটা নিয়ে কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে। কারণ GNU বিপরীতে Lesser General Public License (LGPL) খুব অল্প পরিমাণ অধিকার অন্যের জন্য উন্মুক্ত রাখে। এই লাইসেন্স non-GPL এবং non open source উৎস থেকে ব্যবহার করা লাইব্রেরি ফাইলের জন্য উপযুক্ত। কারণ GPL আশা করে এর কোন অংশ নিয়ে তৈরি করা নতুন সফটওয়ারটিও GPL এর অধীনে প্রকাশিত হবে। কিন্তু যেসব কাজ টাকার বিনিময়ে তৈরি করা হয়, সেগুলো তো নিশ্চয় GPL এর অধীনে প্রকাশ করা হবে না। সেইসব ক্ষেত্রে LGPL একই রকমের লাইসেন্সযুক্ত কাজের অংশকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে।

BSD License
এই লাইসেন্স ফ্রি সফটওয়ার লাইসেন্সের মতোই অনেক রকমের অধিকার অন্যের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। এটা অনেকটা GNU General Public License এর মতোই। এই লাইসেন্সের দুইটি প্রকারভেদ আছে।
১। New BSD License/Modified BSD License, এবং
২। Simplified BSD License/FreeBSD License,
দুটোই GPL এর মতো মুক্ত সফটওয়ারের লাইসেন্স হিসেবে ওপেন সোর্স সমাজে ওপেন সোর্স লাইসেন্স হিসেবে সাদরে সমাদৃত হয়েছে।

নতুন BSD License (”3-clause license”) যতদিন এই লাইসেন্সটি অক্ষুন্ন থাকবে ততদিন সফটওয়ারের অনির্দিষ্ট সংখ্যক বিতরণকে প্রশ্রয় দেয়। তবে প্রত্যেকটি অনুলিপিতে এই লাইসেন্স এবং তার ব্যথর্তা স্বীকার বার্তাটি সংযুক্ত রাখতে হবে। অবশ্য মূল কাজটি থেকে নতুনভাবে তৈরি করা বা পরিবর্তিত কাজের জন্য মূল ডেভেলপারের স্বত্বাধিকারকে বিশেষ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে এই লাইসেন্স বাধা দেয়। নতুন BSD License এবং Simplified BSD এর মধ্যে প্রধান পার্থক্য ঠিক এইখানে। স্বত্বাধিকারকে লিখে রাখার বিষয়কে Simplified BSD লাইসেন্স বাদ দিয়ে দিয়েছে।

MIT License
জনপ্রিয় ওপেন সোর্স লাইসেন্সের মধ্যে এই MIT লাইসেন্স হল সবচাইতে সংক্ষিপ্ত কিন্তু ব্যাপক আকারের। অন্য সব লাইসেন্সের মধ্যে এই লাইসেন্সের শর্তগুলো খুবই দুর্বল এবং সহজে অনুমতি দিয়ে দেয় এমন। লাইসেন্সের শেষ প্যারাগ্রাফে থাকা গ্যারান্টি না থাকা বিষয়ক অংশটুকু বাদ দিলে এর প্রধান দিকগুলো হলঃ
Permission is hereby granted, free of charge, to any person obtaining a copy of this software and associated documentation files (the “Software”), to deal in the Software without restriction, including without limitation the rights to use, copy, modify, merge, publish, distribute, sublicense, and/or sell copies of the Software, and to permit persons to whom the Software is furnished to do so, subject to the following conditions:

The above copyright notice and this permission notice shall be included in all copies or substantial portions of the Software.
এর অর্থ অনেকটা এরকমঃ
আপনি সফটওয়ারটি নিয়ে যেমন খুশি তেমনভাবে ব্যবহার, অনুলিপি তৈরি এবং উন্নয়ন করতে পারবেন। কোন প্রোজেক্টে ব্যবহার করার জন্য আপনাকে কেউ বাধা দিবে না। আপনি যতবার চান, ততবার কপি করতে পারবেন। যে কোন ফরমেটে আপনি এটা কপি করে বিতরণ করতে পারবেন। আপনি যেভাবে খুশি সেভাবে সফটওয়ার বা কাজটিকে পরিবর্তন করতে পারবেন।
আপনি সফটওয়ারটি বিনেপয়সায় দিতে পারবেন কিংবা বিক্রিও করতে পারবেন। আপনি কিভাবে বিতরণ করবেন, তা নিয়ে কোন বাধানিষেধ নেই।
শুধু এটুকু মেনে চলতে হবে যে এই লাইসেন্সটি সফটওয়ারটির সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে।
আসলে MIT লাইসেন্স খুবই কম বিধিনিষেধযুক্ত একটি লাইসেন্স। এই লাইসেন্সের অধীনে প্রকাশ করা কাজ নিয়ে এটা যে কাউকে যা খুশি তাই করার অধিকার দিয়ে থাকে। এই অধিকারের মেয়াদ থাকবে ততদিন, যতদিন এই লাইসেন্সটি কাজের সাথে সংযুক্ত থাকবে।

Apache License
আর একটি লাইসেন্স হল Apache License, Version 2.0, এই লাইসেন্সটিও ব্যবহারকারীকে অনেক রকমের অধিকার প্রদান করে। এটা কপিরাইট এবং প্যাটেন্ট উভয়ক্ষেত্রে কাজ করে। এই অংশটুকু বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ বেশিরভাগ লাইসেন্স প্যাটেন্ট এর ক্ষেত্রে কাজ করে না। কেউ যদি প্যাটেন্ট করার ক্ষেত্রে কোন উন্মুক্ত লাইসেন্সের খোঁজ করে তাহলে এই Apache License তাকে সহায়তা করতে পারে।

অ্যাপাচি লাইসেন্সের কিছু বিশেষ দিকঃ

অধিকার চিরস্থায়ী
একবার এই লাইসেন্স গৃহিত হলে, তা চিরকালের জন্য প্রযোজ্য হবে।
অধিকার বিশ্বময়
যদি এই লাইসেন্স কোন একটি দেশ থেকে নেয়া হয়, তাহলে তা সারা পৃথিবীর সবকটি দেশের জন্য প্রয়োগযোগ্য হবে। এর অর্থ যদি বাংলাদেশ থেকে এই লাইসেন্স নেয়া হয়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রতেও কার্যকরী হবে।
রয়্যালটি বা ফি ছাড়া অধিকার
এই লাইসেন্স ব্যবহারকারীর অধিকারকে কোনরকম টাকার বিনিময়ে প্রদান করে না। শুধুমাত্র একক ব্যবহার নয়, সমষ্টিগত ব্যবহারের জন্যও কোনরকম অর্থ চাওয়া যাবে না।
অধিকার সার্বজনীন
শুধুমাত্র আপনি একাই নয়, সকলে এই লাইসেন্সের অধীনে সফটওয়ারটিকে ব্যবহার করতে পারবে।
অধিকার অপ্রত্যাহারযোগ্য
একবার গৃহিত হলে কেউ এই লাইসেন্সকে প্রত্যাহার করতে পারবে না। অবশ্য মূল কাজের কোন অংশ যদি প্যাটেন্ট করা হয়, অথবা লাইসেন্স কর্তৃক দেয়া কোন অধিকার বা কোন অংশকে কেউ সামান্যতম পরিবর্তন করে, তাহলে এই লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে।

তবে, যদি কোন ডেভেলপারকে কেউ কৃতিত্ব দিতে চায়, তাহলে তা সে এই লাইসেন্সে প্রদত্ত অধিকারকে অক্ষুন্ন রেখে তা করতে পারে। সেক্ষেত্রে লাইসেন্সের মূল অধিকারের চেতনাকে কোন ভাবেই খর্ব করা যাবে না।

Creative Commons
এই ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সটি ঠিক ওপেন সোর্স লাইসেন্স নয়। কিন্তু Creative Commons (CC) লাইসেন্সের ব্যবহার কোন প্রোজেক্টকে ডিজাইন করার কাজে উল্লেখ করা হয়। স্রষ্টার মানসিকতা অনুযায়ী বিভিন্নরকম Creative Commons লাইসেন্স আছে। এর প্রত্যেকটি নির্দিষ্ট কিছু প্রকারের স্বত্ত্বকে সংরক্ষণ করে। একটি Creative Commons লাইসেন্সের ৪টি প্রধান অংশ আছে। এগুলো আলাদাভাবে বা একইসাথে প্রয়োগযোগ্য।

সংক্ষেপে বিষয়গুলো নিম্নরূপঃ

স্বীকৃতি
মূল লেখকের নামকে অবশ্যই কাজের তৈরিকারক বা স্রষ্টা বা মূল স্বত্ত্বাধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। তার নাম স্বীকার করে কাজটি পরিবর্তন, বিতরণ, কপি করা বা যা খুশি তাই করা যাবে।
ছড়িয়ে দেয়া
একই CC লাইসেন্সের অধীনে কাজটিকে উন্নয়ন এবং বিতরণ করা যাবে।
অবাণিজ্যিক
কাজটির পরিবর্তন, পরিমার্জন বিতরণ এবং এই জাতীয় যেমন মন চায়, তা করা যাবে, তবে তা করতে হবে সম্পূর্ণ অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে। বাণিজ্যিক বলতে কি বোঝায়, তা উল্লেখ করে দিতে হবে। কারণ এর অর্থ একেকজনের কাছে একেকরকম। কেউ মনে করতে পারে যে, এর অর্থা কাজটি বিক্রি করা যাবে না, কেউ ভাবতে পারে যে বিজ্ঞাপনযুক্ত কোন সাইটে এটা রাখা যাবে না আবার কেউ হয়তো ভাবতে পারে যে এটা তখনই বাণিজ্যিক হবে যখন এটা লাভজনক বলে বিবেচিত হবে। তাই আপনি যদি CC লাইসেন্সের অধীনে কোন কাজকে সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেন, তাহলে আপনাকে 'বাণিজ্যিক' শব্দটির একটি পরিষ্কার অর্থ প্রকাশ করতে হবে।
অপরিবর্তনীয়
এর অর্থ আপনি কাজটি কপি এবং বিতরণ করতে পারবেন, কিন্তু কোন রকম পরিবর্তন বা পরিমার্জন বা উন্নয়ন করতে পারবেন না। এমনকি মূল কাজের উপর ভিত্তি করে কোন নতুন কাজ করতে পারবেন না।

আসলে যেমনটা আগেই বলেছি, CC লাইসেন্সের অংশগুলো আলাদাভাবে বা একইসাথে সংযুক্ত অবস্থায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এদের মধ্যে সবচাইতে প্রধানতম অংশগুলো হল 'স্বীকৃত', 'অবাণিজ্যিক' এবং 'অপরিবর্তনীয়'। এর মানে বোঝায় যে আপনি বিনেপয়সায় কাজটি বিতরণ এবং কপি করতে পারেন, কিন্তু তার কোনরকম পরিবর্তন করতে পারবেন না। এবং আপনাকে অবশ্যই কাজটির স্রষ্টাকে স্বীকৃতি দিতে হবে। এই লাইসেন্সটি বেশ ভাল, তবে, আসলে কোন কাজকে কিভাবে ব্যবহার করা হবে, তার উপর আপনার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রদান করে না। এদের মধ্যে সবচাইতে কম নিয়ন্ত্রণ থাকবে 'স্বীকৃতি' লাইসেন্সটিতে। কারণ যতদিন আপনার নামকে স্বীকার করা হবে, ততদিন কাজটি নিয়ে যা খুশি তাই করা যাবে।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে বাংলাদেশে 'সিসি' লাইসেন্স নিয়ে একটি কাজ শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশের পৃক্ষাপটে "ক্রিয়েটিভ কমন্স" লাইসেন্স কিরকমের হতে পারে, কি কি অধিকার উন্মুক্ত করা যেতে পারে, এর আইনী ভিত্তি কেমন হবে, ভাষা কেমন হবে, কি কি টার্ম থাকবে, ইত্যাদি নিয়ে কিছু পদক্ষেপ আমার চোখে পড়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর অগ্রযাত্রা কতটুকু সাধন হয়েছিল, তার কোন খবর পাওয়া যায় নি। সম্ভবত, বাংলাদেশের জন্য নিজস্ব 'ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স' তৈরির কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এ বিষয়ে কর্মতৎপরতা বাড়ুক সেই প্রত্যাশা করি।

ওপেন সোর্স লাইসেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের সাইটগুলো ভ্রমণ করতে পারেন।
লেখাটি তৈরিতে A short guide to open source and similar license লেখার সাহায্য নেয়া হয়েছে।

কয়েকটা মন্তব্য এবং কিছু ভাবনা

বিগত ২৩শে ফেব্রুয়ারি তারিখের এই পোস্টের প্রেক্ষিতে বেশ কিছু আলাপ হয়েছে দেখে আমিও দলে ভিড়ে যেতে চেয়েচিলাম কিন্তু আমার আলাপ একটু দীর্ঘায়িত হবে বলে ভাবলাম এটা পোস্টিং আকারেই দিয়ে দিই।

ওখানে দেখলাম তিনটি মন্তব্য কে বা কারা করেছেন তাদের নাম পরিচয় জানাননি তবে তারিখ এবং সময় দেখে বক্তব্য গুলি এক জনের বলেই মনে হচ্ছে। যাই হোক এক জনই হউন আর তিন জনই হোক সে প্রসংগ মুখ্য নয়। আমি বলতে চাচ্ছি যে যদি আপনারা নাম পরিচয় জানাতেন তাহলে আলাপ করতে আরো বেশি ভাল লাগত। যাকে দেখতে পাচ্ছি না তার সাথে কি আলাপ চলে বলুন?বেশ কিছুদিন আগে এখানেই জনৈক নাম গোপন রাখা ভাইকে বলেছিলাম নাম জানাবার জন্য তাতে তিনি বলেছিলেন তিনি নাকি এদেশের ওয়েব জগতে বিশেষ পরিচিত এক বিক্ষ্যাত ব্যক্তিত্ব কাজেই এমন ব্লগে তার নাম উল্লেখ করলে নাকি তার মান হানি হবে তাই তিনি নাম গোপন রেখেছেন। বেশ তার মান সন্মান যদি এমন ঠুনকো হয়ে থাকে তাহলে আর কি বলব তাকে সেটা রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে না কি বলেন ভাই/বোন?এই যে আপনি এভাবে নিজেকে গোপন রেখে আলোচনা করছেন এটাকে কি বলবেন?এটাও কি এক ধরনের চুরি নয়?অসির চেয়ে মসির শক্তি বেশি এটাতো আর নতুন কথা নয়। লাঠি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিলে সে চিকিতসা করে ঠিক করে নেয়া যায়, কিন্তু কলম দিয়ে মাথা ফাটালে সে আর সহজে কুলিয়ে উঠা যায় না রিতিমত পথে বসতে হয়। দরিদ্রের চেয়ে ধনীর চাহিদাও যেমন বেশি তার চুরি করার ক্ষমতা, কৌশল বা জ্ঞ্যানও বেশি।

আমাদের দেশে ওষুধ কোম্পানি গুলি ক্যাপসুলের ভিতর ময়দা দিচ্ছে, পোড়া মবিল দিয়ে চানাচুর ভাজছে, শুকনো মরিচের সাথে ইটের গুড়ি মিশাচ্ছে, চা পাতা দিয়ে খেজুরের গুরের রঙ করছে, খেজুরের গুরের সাথে চিনি মিশাচ্ছে, মাছে বিষাক্ত ফর্মালিন দিচ্ছে এ কথা এখন আর নতুন কিছু নয়, এ আমার নিজের দেখা। দুধে পানি মেশান আমরা মেনে নিয়েছি শুধু গোয়ালার কাছে একটাই অনুরোধ বাবা নর্দমার পানি না দিয়ে কলের পানি দিও, তাই না?

বিলাতে যে সব মাছ বাংলাদেশ থেকে আসছে ভাগ্য ভাল যে এই মাছ গুলি বাঙ্গালিরা বাদে আর কেও খায় না। যদি এগুলি এদেশের খাদ্য মান নিয়ন্ত্রন কারী বিভাগের নজড়ে আসে তা হলে বাংলাদেশ থেকে তাতক্ষনিক ভাবে এই মাছ আমদানি করা বন্ধ করে দিবে। যেখানে সারা বিশ্বে হিমায়িত মাছ পানি ছাড়া হিমায়িত হয় সেখানে আমাদের দেশ থেকে যা আসে তা বরফের ব্লকে করে আসে, ৫০০ বা ৬০০ গ্রাম ড্রেসিং করা মাছের একটা ব্লকে কোন রকম ভাল একটা টুকরা থাকে বাকি সবই প্রায় কাটা সহ হাবিজাবি দিয়ে ভর্তি তার কিছু আবার পচাও থাকে। মান নিয়ন্ত্রনের কোন বালাই নেই। থাকবেই বা কেন এগুলিতো বাঙ্গালিরাই খাবে তাদের পেট এত নাজুক না। কি করা, নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল বলে বাঙ্গালিরা তাই ৩/৪ পাউন্ড দিয়ে কিনে খাচ্ছে। ভাতে মাছে বাঙ্গালি, মাছ না হলে এক বেলা চলে না, খেতেই হবে।

এইতো নাম না জানা ভাই/বোন এখন আপনাকে সম্বধন করা দরকার কিন্তু কি বলে ডাকি?আচ্ছা এই দেশে যার নাম জানা নেই তাকে জন(John) বলে ডাকে, কিন্তু আপনিত আর ইংরেজ নন তা হলে আপনাকে কি বলে ডাকি?আচ্ছা সালাম ভাই বলি?আপত্তি নেইতো?আর বোন হলে সালমা!আচ্ছা সালাম ভাই আমাদের বাঙ্গালিদের দৃষ্টি সীমা কতদূর?এরা চুরি করলে আর কতটাই বা করতে পারে?রিয়া দিদি ইউরোপ আমেরিকা ঘুড়ে দেখে গেছেন তিনি জানেন এসব দেশে কি ধরনের অপরাধ হয়। বড় বড় কোম্পানির নামে কি ভাবে সাধারন মানুষের পকেট খালি করছে। কেন, আমাদের দেশের মোবাইল ফোন কোম্পানি গুলি দেখেন নাই?গ্রামীন ফোন প্রথম দিকে মানুষের পকেট সাফ করেছে।১০ টাকা মিনিট!এখন ২ টাকায় কি করে চলছে?সেই একই লাইনইত তাই না?

জানেন লন্ডনে সাধারন একটা মোবাইল ফোনের জন্য একজন সলিসিটর(উকিল)কে জীবন দিতে হয়েছে। সুপার স্টোর থেকে সিসিটিভি ক্যেমেরা, বারকোড ডিটেক্টরের চোখ এড়িয়ে এদেশের বখাটেরা কি ভাবে চুরি করছে। পণ্যের গা থেকে বার কোড ছিড়ে বা স্ক্রেপ করে মুছে ফেলে দিব্যি মেইন গেটে থাকা বার ডিটেক্টরের সিগ্ন্যাল ফাকি দিয়ে চলে যাচ্ছে। অথচ এদের কিন্তু ভাতের অভাব নেই। কাল কি খাব, ছেলের স্কুলের বেতন দিব কি দিয়ে, ভবিষ্যতে থাকবো কোথায় সে ভাবনা নেই।

বাঙ্গালিদের ইন্টারনেটে চুরির ক্ষমতা আছেই বা কি আর করবেই বা কি?বড় বড় ক্রেডিট কার্ড/ডেবিট কার্ডের চুরি কারা করছে?মেইল স্প্যাম কারা করছে?মাঝে মাঝে ইয়াহু লটারি বা এরকম লটারির ফাদ কারা পাতছে?কিছু দিন আগেই এখানে রিয়া দিদির পোস্টিঙ্গেই দেখেছি, মেইল স্প্যাম, ক্রেডিট কার্ডের সুরক্ষা এই সব পোস্টিং তাতে কোথাও বাংলাদেশি হ্যাকার বা তথ্য চুরির ঘটনা দেখিনি। সেদিন ইয়াহু নিউজে দেখলাম ফেস বুকে আমেরিকান পুরুষ বৃটিশ মহিলার সাথে বন্ধুত্ব করে বছর দুয়েক পর দেখে তার একাউণ্টের ৬০,০০ ডলার নেই, আলাপে আলাপে নানা কথায় ওই মহিলা একাউন্ট নম্ব্র জেনে এই কান্ড ঘটিয়েছে।

বৃটেনের এমপি বা মন্ত্রিরাও তাদের বাড়ি মেরামত, টিভি কেনা, হিটার মেরামত বা ইত্যাদি নামে নানা ভাবে সরকারি তহবিল থেকে অধিক অর্থ দাবি করে। বড় লোকেরা চুরি করলে দোষ হয় না সেটা এলাউন্স নামে চলে যায়। গরীবেরা চুরি করলেই যত দোষ, আরে গরীবেরা চুরি করে পেটের দায়ে।

আমার মেয়ে একদিন সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে লন্ডনের অক্সফোর্ড সার্কাসের কোন এক ক্যাশ মেশিন থেকে ২০ পাউন্ড তুলেছে। কিছু দূর আসার পর ওর মনে হলো কাল বাসা ভাড়া দিতে হবে। আচ্ছা আবার ফিরে ওই মেশিনে কার্ড ঢুকিয়ে ৫০ পাউন্ড তোলার অপশন দিয়েছে আর মেশিন বলছে তোমার একাউন্টে এত টাকা নেই। কি আশ্চর্য! এই একটু আগে দেখলাম ৩০০ পাউন্ডের বেশি রয়েছে, এখন এ কি বলছে!! ভেবে দেখুন এক জন ছাত্রের জন্য ৩০০ পাউন্ড অনেক টাকা। যাক আর কিছু না করে আবার উলটো হেটে তার ব্যাঙ্কের মেশিনে কার্ড ঢোকালে সেই মেশিনও একই কথা বলছে। তখন মেয়ে আমাকে ফোন করে কান্নায় ভেঙ্গে পরার অবস্থা। কি হয়েছে বল, না হলে আমি কি বুঝব?শুনলাম। শুনে বললাম এর মধ্যাই এটা ফ্রড হয়ে গেছে, তুমি চিন্তা করনা কাল সকালেই ব্যাঙ্কে গিয়ে জানাও। ব্যাঙ্কে গেলে ওরা ফ্রড এপ্লিকেশন ফর্ম বের করে ফিল আপ করিয়ে সই স্বাক্ষর রেখে বলল আমরা আমাদের ফ্রড ইনকোয়ারি বিভাগে পাঠাচ্ছি তোমাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাব। দুই সপ্তাহ লাগেনি ৩ দিন পরেই ফোন করে বলল যে তুমি একটু ব্যাঙ্কে আস। হ্যা, আমাদের ফ্রড বিভাগ খুজে দেখেছে তমার এই টাকা ফ্রড হয়েছে। এই নাও তোমার ফ্রড হওয়া ২৭৬ পাউন্ড তোমার একাউন্টে জমা করে দিলাম।

বর্তমানে কম্পিউটারের মাধ্যমে আমেরিকার সরকারি অফিস সহ বেশ কিছু বড় ব্যবসা প্রতিষ্টানের তথ্য চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে সে দেশেরই এক চীনা স্কুল থেকে। এদের কাছে বাঙ্গালিরা কিছুই না, শিশুর মত।
এই যে সারা বিশ্বে এত কম্পিউটারে ইন্টারনেট হ্যাকিং, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের পিন নম্বর চুরি এত কিছু হচ্ছে তাতে কি বাঙ্গালিদের নাম এসেছে কখনো?বরং বাঙ্গালিরা দেশের বাইরে সততার পরিচয় দিয়েই আসছে। কিছু দিন আগে নিউয়র্কের এক বাঙ্গালি তরুন তার ট্যাক্সিতে ফেলে যাওয়া ২৬,০০০ ডলার ফেরত দেয়ার কাহিনী এই সাইটে প্রচার হয়েছিল। তবে একথা সত্য যে দু দিন বিদেশে থেকে অনেকেই বাঙ্গালি বলে পরিচয় দিতে লজ্জা পায়, ভাতকে রাইস না বললে মানায় না। পোষাক আসাকে চলনে বলনে নিজের স্বকীয়তা বদলে ফেলাটাই পছন্দ করে।

ভাল মন্দ সব জায়গায়ই আছে। যেমন আছে রাত দিন। আমাদের দেশে যা হচ্ছে তার অধিকাংশই হচ্ছে দারিদ্রের কারনে। চুরি করতেও মেধার প্রয়োজন হয়। আমাদের মেধা এখনো সে পর্যায়ে পৌছাতে পারেনি বা পারবেও না কারন আমাদের বাঙ্গালিদের মন এমনিতেই কোমল তারা কঠিন হলেও কত হতে পারে?কিছু দিন আগে বৃটেনের সংবাদ পত্রে দেখেছি ৩/৪ জন কিশোর ছেলে মিলে এক হরিন শাবককে চাপাটি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মেরে তামাসা করেছে। আমাদের কোন বাঙ্গালি কিশোরের এমন প্রবৃত্তি হবে না।

নাম না জানা ভাই এবং রিয়া দিদির সাথে এ ব্যাপারে আমার মতের কোন বিভেদ নেই। তারপরেও ভাবছেন হয়ত তাহলে আর এতো কিছু বলা কেন। শুধু তুলনা করার জন্যই এই কাহিনী তুলে ধরলাম। নাম না জানা ভাইকে অনুরোধ করছি আসুননা ভাই আমারা পরিচিত হই, সবাই সবাইকে জানি, চিনি একটা সু সম্পর্ক তৈরী হোক।
 

পাঠকের প্রতিক্রিয়া

কিছু কথা

সফটওয়ার ও ওয়েবওয়ারের বিভিন্ন টিপ্‌স, টিউটোরিয়াল, হ্যাক্‌স, টেমপ্লেট বা থিম্‌স ইত্যাদি নিয়েই আমি ব্লগ লিখছি। আমার প্রধান আগ্রহ ব্লগিং টিপস। এছাড়াও প্রযুক্তির বিচিত্র বিষয় নিয়ে মত বিনিময়, সমস্যা ও তার সমাধান এবং আলোচনা করার জন্য এই ব্লগ খুলেছি। আশা করি আপনি নিরাশ হবেন না। এই ব্লগের সব লেখাগুলো যেকোন মিডিয়ায় এই লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশ করতে পারবেন। বিস্তারিত পড়ুন....

Search This Blog

© 2009-2014 Bangla Hacks | Design by: Bangla Hacks. Powered by: Blogger