গুগল ক্রোম

গুগল ক্রোম এখন আপনার হাতের নাগালে।

ইন্টারনেট জগতের প্রথম ব্রাউজারটি আবিষ্কার হয়েছিল প্রায় ১৫ বছর আগে। এখন এই ব্রাউজার ইন্টারনেট জগতে প্রবেশের দরজা হয়ে গেছে। ইন্টারনেট ব্রাউজারের মাধ্যমেই আমরা তথ্য খোঁজা , চ্যাট, বই বা পত্রিকা পড়া, ই-মেইল করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অর্থনৈতিক লেনদেন, কেনাকাটা পড়াশোনার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করে থাকি। যেহেতু ইন্টারনেট ব্যবহারের পুরো সময়টাই ব্যবহারকারী ব্রাউজারের মধ্যেই কাটায়, তাই ব্রাউজারের প্রতি ব্যবহারকারীর কিছু কিছু অতিরিক্ত চাহিদা থাকে, একটি ব্রাউজার কত দ্রুত একটি ওয়েবসাইট লোড করতে পারে বা এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কত শক্তিশালী ইত্যাদি বিষয়ে সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সচেতন থাকে। প্রথম দিকের ওয়েবসাইটগুলো বেশির ভাগই লেখাভিত্তিক (Text) ছিল, ছবি থাকত খুব কম। ফলে এগুলো ওপেন হতে বেশি সময় লাগত না। কিন্তু বর্তমানের সাইটগুলোতে অনেক বেশি ছবি ও অ্যাপ্লিকেশন থাকে, যা লোড করতে অনেক ব্রাউজারেরই হিমশিম খেতে হয়। সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল এই দিকগুলো মাথায় রেখে ক্রোম (Chrome) ব্রাউজারটি তৈরি করেছে। এটার প্রথম পরীক্ষামূলক সংস্করণ এখন ব্যবহারকারীদের হাতের নাগালে এসে গেছে। গতকালকেই আমি জানিয়েছিলাম যে গুগল আজ এই ব্রাউজার ডাউনলোড করতে দেবে। আজ আপনি ক্রোম ব্রাউজার ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে

ক্রোম ব্রাউজারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল যে একটি মুক্ত সফটওয়ার। অর্থাৎ এর কোডগুলো উন্মুক্ত। গুগল মুক্ত সোর্স আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাদের এই ব্রাউজারের সোর্স সংকেত উন্মুক্ত রেখেছে। ফলে যে কোন ব্যবহারকারী তার নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রোমকে পরিবর্তন করতে পারবে।

গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের মতোই গুগল ক্রোমের ইউজার ইন্টারফেস খুব সাধারণ ও দ্রুতগতির। গুগলের এই ব্রাউজার এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানের যেকোনো জটিল অ্যাপ্লিকেশন দক্ষতার সঙ্গে চালাতে সক্ষম। এটির প্রতিটি ট্যাবকে আলাদাভাবে সাজানো হয়েছে একটি বিচ্ছিন্ন স্যান্ডবক্সের মতো, যা অন্যান্য ব্রাউজারের মতো একটি ট্যাব ক্রাশ করলে যাতে অন্যগুলো ক্রাশ না করে। এতে অত্যন্ত শক্তিশালী ভি-৮ জাভাস্ক্রিপ্ট ব্যবহার করা হয়েছে, যা পরবর্তী প্রজন্মের যেকোনো শক্তিশালী অ্যাপ্লিকেশন চালাতে সক্ষম।

গুগলের এই ওয়েব ব্রাউজার তৈরিতে তারা অনেক মুক্ত সোর্স প্রজেক্টের সাহায্য নিয়েছে। গুগল অ্যাপল ওয়েবকিট, মোজিলা ফায়ারফক্স থেকে বিভিন্ন কম্পোনেন্ট ব্যবহার করেছে এবং এই ব্রাউজারের সব প্রোগ্রামিং সংকেতই উন্নুক্ত। ফলে বিভিন্ন মুক্ত সোর্স প্রতিষ্ঠান এটিকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করতে পারবে।

গুগল ক্রোমের একটি বিশেষ ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটির ওয়েব সার্চ, ওয়েব ইতিহাস, অ্যাড্রেস বার ইত্যাদি একটি বক্সের মধ্যেই দেওয়া হয়েছে। প্রতিবার নতুন ট্যাব খোলা হলে আগের বারের সর্বাধিক দেখা সাইট, সার্চ ইঞ্জিন, বুকমার্কড সাইটের একটি ভিজুয়াল স্যামপল দেখাবে। অ্যাপ্লিকেশন শর্টকাটের মাধ্যমে ব্রাউজার না খুলেই বিভিন্ন ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যাবে। নির্দিষ্ট কোনো ট্যাব ড্রেগ অ্যান্ড ড্রপের মাধ্যমে একটি নতুন উইন্ডোতে খোলা যায়। প্রতিটি ট্যাব আলাদাভাবে নিজস্ব ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে।

গুগল ক্রোম কোনো ফিশিং সাইট (Fishing Site) বা ম্যালওয়ার সাইট (Malware Site) সম্পর্কে সাবধান করবে ব্যবহারকারীকে এবং এসব সাইটের আক্রমণ থেকে কম্পিউটারকে রক্ষা করবে। এটিতে মাত্র একটি ক্লিক দিয়েই ওয়েবসাইট বুকমার্ক করা যায়।

অবশ্য এই সুবিধাগুলো বিভিন্ন এডঅন এর মাধ্যমে ফায়ারফক্সের মধ্যেই ব্যবহার করা যায়। তারপরও গুগলের ক্রোম ফায়ারফক্সের সাথে যুদ্ধে কতটুকু এগিয়ে যেতে পারে তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে অনলাইন জগত।
 

পাঠকের প্রতিক্রিয়া

কিছু কথা

সফটওয়ার ও ওয়েবওয়ারের বিভিন্ন টিপ্‌স, টিউটোরিয়াল, হ্যাক্‌স, টেমপ্লেট বা থিম্‌স ইত্যাদি নিয়েই আমি ব্লগ লিখছি। আমার প্রধান আগ্রহ ব্লগিং টিপস। এছাড়াও প্রযুক্তির বিচিত্র বিষয় নিয়ে মত বিনিময়, সমস্যা ও তার সমাধান এবং আলোচনা করার জন্য এই ব্লগ খুলেছি। আশা করি আপনি নিরাশ হবেন না। এই ব্লগের সব লেখাগুলো যেকোন মিডিয়ায় এই লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশ করতে পারবেন। বিস্তারিত পড়ুন....

Search This Blog

© 2009-2014 Bangla Hacks | Design by: Bangla Hacks. Powered by: Blogger