ড্রিমলিনাক্সে বিভিন্ন সেটিং সহজে পরিবর্তন করার জন্য একটি কন্ট্রোল প্যানেল রাখা হয়েছে। এখানে সাউন্ড কার্ড কনফিগার, কম্পিজ ফিউশন/এমেরাল্ড থিম সহ অন্যান্য অনেক প্রয়োজনীয় ফিচারে মাত্র একটি মাউস ক্লিকের সাহায্যে প্রবেশ করতে পারবেন....
উইন্ডো ম্যানেজমেন্ট এবং সফটওয়্যার লঞ্চার হিসাবে প্যানেলের পাশাপাশি ড্রিমলিনাক্সে আছে জনপ্রিয় ডক এবং উইন্ডো নেভিগেটর সফটওয়্যার Avant Window Navigator বা সংক্ষেপে AWN. এটি অনেকটা ম্যাকের জুমি বার এবং উইন্ডোজের রকেট ডক/অবজেক্ট ডকের মত। এতে আপনি প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার, স্থান বা ফোল্ডার শর্টকাট আইকন হিসাবে রাখতে পারবেন এবং প্রয়োজনের সময় মাত্র একটি ক্লিকের সাহায্যে সফটওয়্যার বা স্থানটি চালু করতে পারবেন। শর্টকাট লঞ্চারের পাশাপাশি এটি উইন্ডো ম্যানেজার হিসাবেও কাজ করে... কোন উইন্ডো ওপেন করলে শর্টকাটসমূহের ডানদিকে সেটি আইকন হিসাবে প্রদর্শিত হবে....
এবার দেখা যাক ড্রিমলিনাক্সে কি-কি সফটওয়্যার ডিফল্টভাবে দেয়া আছে......
গান শোনার জন্য ড্রিমলিনাক্সে আছে জনপ্রিয় রিদমবক্স মিউজিক প্লেয়ার। গান শোনার পাশাপাশি মুভি দেখার জন্য আছে Gxine এবং Mplayer. গ্রাফিক্স এর কাজের জন্য আছে ইঙ্কস্কেপ এবং গিম্পশপ। অডিও সিডি রিপের জন্য আছে সাউন্ড জুসার এবং অডিও ফরম্যাট পরিবর্তনের জন্য আছে সাউন্ড কনভার্টার। অফিসের কাজের জন্য আছে ওপেন অফিস অর্গ, পিডিএফ ও অন্যান্য টেক্সট ফাইল দেখার জন্য ডকুমেন্ট ভিউয়ার। সিডি/ডিভিডি রাইটিং এর জন্য আছে ব্রাসেরো। ওয়েব ব্রাউজিং এর জন্য আছে ফায়ারফক্সের অনুরূপ আইসউইসেল ব্রাউজার এবং চ্যাট এর জন্য আছে জনপ্রিয় ইন্সট্যান্ট মেসেজিং সফটওয়্যার পিজিন। মডেম দিয়ে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য এতে নোম পিপিপি সফটওয়্যার ডিফল্টভাবে দেয়া আছে। ডেস্কটপ এনভায়রন্টমেন্ট হিসাবে আছে নোম এবং এক্সএফসিই। এতে কোন গেম নেই তবে ব্যবহারকারী চাইলে লিনাক্স সমর্থিত যেকোন গেম ইন্সটল করতে পারবেন।
একনজরে ড্রিমলিনাক্সের বিশেষ সুবিধা এবং অসুবিধাসমূহ:
বিশেষ সুবিধা:সবশেষে বলা যায়.... নতুন প্রজন্মের জন্য এবং বিনোদনপ্রিয় ব্যবহারকারীদের জন্য একটি চমৎকার অপারেটিং সিস্টেম হতে পারে ড্রিমলিনাক্স ৩.০। যাদের কম্পিউটারে উবুন্টু চালানোর জন্য পর্যাপ্ত Ram বা প্রসেসর নেই তারাও এটি ব্যবহার করতে পারবেন। হার্ডডিস্ক ছাড়াই কম্পিউটার চালাতে পারবেন ড্রিমলিনাক্স লাইভ সিডি বা পেন-ড্রাইভ সংস্করণ দিয়ে। এছাড়াও এতে অন্যান্য লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনের মতই ফ্র্যাগমেন্টেশনবিহীন ext3 ফাইল সিস্টেম, বাংলা ভাষার সমর্থন, উচ্চগতি এবং সিস্টেম রিসোর্সের সুষ্ঠু ব্যবহার, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ইত্যাদি সব সুবিধাই আছে।
১। খুব দ্রুত বুট হয়। বুট হতে উবুন্টুর প্রায় অর্ধেক সময় নেয়।
২। সহজবোধ্য ইন্টারফেস। জনপ্রিয় সফ্টওয়্যার, কোডেক এবং ড্রাইভার সহজে ইন্সটলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে।
৩। কম্পিজ এবং এমেরাল্ড খুব সহজে এনেবল করা যায়। গ্রাফিক্যাল ইফেক্ট উবুন্টু গাটসির চেয়ে স্মুথ এবং স্টেবল।
৪। থিম, আইকন এবং কার্সর দেখতে সুন্দর। পছন্দমত জিটিকে বা এমেরাল্ড থিম ব্যবহার করা যায়। বেশ কিছু এমেরাল্ড থিম ডিফল্ট দেয়া আছে।
৫। রুট পাসওয়ার্ড যাতে বারবার প্রয়োগ করতে না হয় সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। ব্যবহারকারী চাইলে প্রথমবার রুট পাসওয়ার্ড দেয়ার সময় ওই সেশনে যাতে আর পাসওয়ার্ড দিতে না হয় সে অপশন নির্বাচন করতে পারেন।
৬। কম্পিজের ডেস্কটপ কিউব প্লাগ-ইন দিয়ে পাশাপাশি চারটা ডেস্কটপ চালানো যায়।
অসুবিধা:
১। উবুন্টুর মত Add/Remove Application ম্যানেজার নেই। সবকিছু সাইনাপ্টিক বা apt-get দিয়ে ইন্সটল করতে হয়। এতে নতুন লিনাক্স ব্যবহারকারীদের কিছুটা অসুবিধা হতে পারে।
২। ডেবিয়ান প্যাকেজ সরাসরি ইন্সটল করা যায় না। তবে প্রয়োজনীয় কনফিগারেশন করে নিলে ইন্সটল করা যেতে পারে।
৩। বাংলা ল্যাঙ্গুয়েজ সাপোর্ট ইন্সটলের সময় বাংলা ফন্ট ইন্সটল হয় না। আলাদাভাবে বা সাইনাপ্টিক দিয়ে ইন্সটল করে নিতে হয়।
৪। সাউন্ড সাপোর্টে কিছুটা সমস্যা আছে। তবে ড্রিমলিনাক্স ফোরামে অভিযোগ করলে সমাধান পাওয়া যেতে পারে।
ড্রিমলিনাক্স ৩.০ বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারবেন এই সাইট থেকে...।