Floating town:

floating town. The Royal Caribbean Cruises Ltd

ভাসমান শহর!  নাম শুনেছেন কখনো?নিশ্চয়ই নয়। ভাবতেও অবাক লাগছে তাই না?মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক ভাসমান শহর আবার কি?আসুন আজ এমন এক শহরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি যার নাম Oasis of the Seas , না বন্ধু গন এটা আসলে কোন শহর নয় এটা The Royal Caribbean Cruises Ltd. কম্পানির মালিকানায় ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে চলাচল কারি বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় যাত্রী বাহি বিলাস বহুল একটা সামুদ্রিক জাহাজ। উপরের ছবিতে দেখুন। আমাদের দেশেরতো বটেই এমনকি আমেরিকার অনেক ছোট শহরের চেয়ে অনেক বেশি জন সংখ্যা এর ধারন ক্ষমতা। ৬৩০০ যাত্রী এবং ২৩০০ ক্রু মিলিয়ে মোট ৮৬০০ জন মানুষ এক সাথে এক সপ্তাহের সমুদ্র যাত্রা করতে পারে। টাইটানিকের নাম অবশ্যই শুনেছেন, অনেকেই হয়ত টাইটানিক সিনেমাও দেখেছেন। এটা ৫টা টাইটানিকের চেয়েও বড়। গত ডিসেম্বরে এটা প্রথম সমুদ্র যাত্রা আরম্ভ করেছে।
স্বাভাবিক ভাবে মনে একটু কৌতুহল জাগতে পারে এই এত মানুষ নিয়ে কি করে সমুদ্রে চলাচল করে এবং তাদের নানা রকম প্রয়োজন কিভাবে মিটায়। আসুন এবার এর নানা খুটিনাটি তথ্য দেখা যাকঃ

১। প্রায় ৫টা A380 মডেলের এয়ারবাসের চেয়ে বড়, ভিন্ন ভাবে বলতে গেলে ৪টা ফুট বল মাঠের চেয়েও বড়। তাজা বাগান সহ ‘সেন্ট্রাল পার্ক’ নামে একটা পার্ক, ২৪ টা রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

২। সপ্তাহের প্রতি শনিবারে ৭৫০টা প্যালেটে করে ৭০০টন নানাবিধ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানীয়, ফুল ও অন্যান্য কঞ্জুউমাবল মালামাল সংগ্রহ করতে হয়

৩। যাত্রী, ক্রু সবার জন্য ২০ গ্যালন সেরী এবং ৮০,০০০ বোতল বিয়ার প্রয়োজন হয়

৪। এক সপ্তাহের একটি ট্রিপের জন্য ভিতরের দিকে কেবিন ভাড়া ১৪৫৮ মার্কিন ডলার এবং দ্বিতল বিশিষ্ট সমুদ্রের দিকে মুখ করা সুইট ভাড়া ৩২০০ মার্কিন ডলার। আমাদের কাছে শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি যে আগামী দুই বত্সরের জন্য সব গুলি সুইট বুক করা হয়ে গেছে। অর্থাৎ আগামী দুই বত্সরের মধ্যে এর কোন সুইট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

৫। দিন রাত ২৪ ঘন্টা পালা ক্রমে ক্রুরা নানা কাজ করছে, শুধু জানালার কাচে জমা নোনা জল পরিষ্কার করার জন্য ডজন খানিক ক্রু এবং ১৮টা রোবট কাজ করছে।

৬। এতে স্বয়ং সম্পূর্ণ জিমনেসিয়াম এবং কয়েকটা সুইমিং পুল রয়েছে।

৭। ২৪ ঘন্টা ধরে এর লন্ড্রিতে ৩৪ জন ক্রু কাজ করছে যাদেরকে দিনে প্রায় ২০,০০০ টেবিল ক্লথ, ন্যাপকিন, বিছানার চাদর, তোয়ালে ধোয়া, ইস্ত্রি করা এবং ভাজ করতে হয় তবে চাদর, ন্যাপকিন‌ টেবিল ক্লথ ইস্ত্রি করে বিশাল আকারের মেশিন কিন্তু তোয়ালে ও টেবিল ন্যাপকিন নানা ডিজাইন করে ভাজ করার কাজ হাতেই করতে হয়।

৮। ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট সহ ৩ জন ডাক্তার আছে, ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে এক জন মানুষের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এমনকি হার্ট এটাক হলেও তার চিকিৎসার যাবতীয় আয়োজন আছে। প্রতি যাত্রায় অন্তত একটি এ ধরনের প্রয়োজন দেখা দেয়। তবে ক্ষেত্র বিশেষে জাহাজের ডাক্তার এবং ক্যাপটেন পরামর্শ করে জাহাজের দিক পরিবর্তন করে নিকটস্থ বন্দরে ভেড়াবার ক্ষমতা দেয়া আছে, মাঝে মাঝে রুগী কে হেলিকপ্টারে করে স্থানন্তর করার ব্যবস্থাও আছে।
জাহাজে যে ধরনের চিকিতসা দেয়া হয় তার মধ্যে খাদ্য সংক্রান্ত পেটের অসুখ, পিঠে ব্যাথা, গলায় ইনফ্যাকশন, সাইনুসাইটিসের চিকিতসাই বেশি। প্রতি যাত্রায় ২০০০-৩০০০ meclizine ব্যবহার হয় যা কেবল মাত্র সী সিকনেসের যেমন জাহাজের রোলিং পিচিং এর কারনে বমি রোধের জন্য  বা অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়।

৯। ২০০ ক্রু যাত্রীদের মনোরঞ্জনের জন্য নিয়োজিত থাকে যেমন, বাচ্চা দের নানা রকম অনুষ্ঠান, আলো ও মিউজিক নিয়ন্ত্রণ করা সহ নানা রকম বিনোদন মুলক আয়োজন করে।

১০। ৮০০০ এর অধিক মানুষের খাবার ব্যবস্থার জন্য ২৬টা গ্যালি বা রান্না ঘরে যাত্রীদের সকালে ঘুম ভাঙ্গার আগে থেকেই রান্নার কাজ চলতে থাকে।

১১। এই সব মালামাল জাহাজের মাতৃ ভুমি(port of registry)Fort Lauderdale শহরের Port Everglades বন্দর থেকে প্রতি শনি বার প্রায় সকাল ৬টা থেকে জাহাজের ডেকে এসে পৌছাতে থাকে এবং সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সেগুলি চাহিদার তালিকার সাথে মিলিয়ে বাছাই করে ভাঙ্গা প্যাকেট, পচা ইত্যাদি সরিয়ে ফেলে ফর্ক লিফটে করে ভান্ডারে নির্দিষ্ট জায়গা অনুযায়ী স্টোরিং হতে থাকে। যেমন, চা, কফি, দুধ, মাছ, মাংশ, চাউল, ময়দা, বিস্কুট, সব্জী, সস, কেচাপ, মাখন, পনীর, রুটি, নানা ধরনের মদ এবং পানীয় ইত্যাদি যেটা যেখানে রাখতে হয় সেখানে রাখা হয়।

১২। বিভিন্ন গ্যালিতে বিভিন্ন রকমের খাবার রান্না হয়, যেমন যে গ্যালিতে মাছ মাংশ রান্না হয় সেখানে সব্জী রান্না বা বেকিং হবে না আবার সকালের নাস্তা বা হালকা নাস্তার জন্য ভিন্ন গ্যালি এই ভাবে।

১৩। বিকেল ৫টার মধ্যে সমস্ত মালামাল লোডিং কাজ শেষে পরবর্তী যাত্রী ওঠানো আরম্ভ হয়। এদের নিয়ে আবার ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দিকে যাত্রা শুরু করে।

১৪।
ক) এই ভাসমান শহরের গ্রস টনেজঃ ২,২৫,২৮২ টন
খ) প্রপেলার সংখ্যা ৩টাঃ আকার দৈত্যাকার, এবং ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরতে সক্ষম
গ) হারবারে ঢুকা এবং বের হবার সময় ব্যতিত এটা স্বয়ংক্রিয় অটো পাইলটিং ব্যবস্থায় স্টিয়ারিং করে
ঘ) চার্টিং ব্যবস্থাঃ ইলেকট্রনিক, চার্ট হচ্ছে সামুদ্রিক ম্যাপ যা দেখে নেভিগেশন করে
ঙ) ক্যাপটেনঃ Captain Thore Thorolvsen
চ) ক্যাপটেনের ভাষ্যঃ এটি, বিশাল, প্রশস্ত এবং ভীষন ওজন। [Source]

Up date: এই জাহাজের আরো কিছু ছবি এখানে দেখতে পাবেন।
 

পাঠকের প্রতিক্রিয়া

কিছু কথা

সফটওয়ার ও ওয়েবওয়ারের বিভিন্ন টিপ্‌স, টিউটোরিয়াল, হ্যাক্‌স, টেমপ্লেট বা থিম্‌স ইত্যাদি নিয়েই আমি ব্লগ লিখছি। আমার প্রধান আগ্রহ ব্লগিং টিপস। এছাড়াও প্রযুক্তির বিচিত্র বিষয় নিয়ে মত বিনিময়, সমস্যা ও তার সমাধান এবং আলোচনা করার জন্য এই ব্লগ খুলেছি। আশা করি আপনি নিরাশ হবেন না। এই ব্লগের সব লেখাগুলো যেকোন মিডিয়ায় এই লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশ করতে পারবেন। বিস্তারিত পড়ুন....

Search This Blog

© 2009-2014 Bangla Hacks | Design by: Bangla Hacks. Powered by: Blogger