পড়ুন: ব্লগিং করে পাওয়া এক বিরাট সাফল্য
লেখক: মিসেস মনোয়ারা খালিদ
ব্লগিং এ সাফল্যের বিষয়ে এই ব্লগে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে আপনাদের সকলের মন্তব্যের জন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ঠিক এই ধরনের সচেতনতা গড়ে তুলাই আমার লক্ষ্য।
প্রথমেই একটি অনুরোধ জানিয়ে নিই, অনুগ্রহ করে আমাকে কেও ম্যাডাম বলবেন না, এছাড়া আপা, দিদি, ভাবি বা বৌদি যে যাই বলুন কিন্তু ম্যাডাম নয়। এব্যপারে আমি শুভব্রত'র ডাকে খুব খুশি হয়েছি।
আমরা মানুষ হয় জন্মেছি। মানুষই মানুষের পাশে দাঁড়ায়, মানুষকে ভালোবাসে। পশুর মধ্যেও ভালোবাসা স্নেহ মমতা আছে। আমাদের কেন থাকবে না? আমি নিজের চোখে পশুর স্নেহ দেখে অবাক হয়েছি। শুনুন তাহলে। ঢাকার কাছেই আমাদের একটা কৃষি খামার ছিলো। সেখানে একটা অসুস্থ কুকুর যে কিনা তার বাচ্চাদের খাবার এনে দিতে পারছিলোনা এবং অসুস্থতার কারনে তার বুকেও দুধ ছিলো না, তার সেই তিনটা বাচ্চাকে প্রতিবেশী অন্য একটা কুকুর মুখে করে খাবার এনে খাইয়ে দিতে দেখে আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। বুঝুন তাহলে, আমরা কেন আর এক জনকে সাহায্য করবো না? আমরাতো সৃষ্টির সেরা জীব তাই না? এটা আমাদের শুধু স্নেহ মায়া ভালোবাসার কথা নয় এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
বিগত ১০ বছরে গুগলের আমনত্রনে ৩০ কোটি ব্লগ খোলা হয়েছে। এর মদ্ধ্যে আমাদের বাঙ্গালিদের কতগুলি তা আমি জানি না। তবে এই সুযোগ অবশ্যই গুগল এমনি এমনি দেয়নি এটা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারনের এক অসাধারন নিখুত প্রক্রিয়া। একটা নির্দিস্ট ধারা বজায় রেখে ব্লগিং করলে সেই ব্যবসার কিছু অংশ আমরাও পেতে পারি এতেও ব্লগ পরিচালকদের উতসাহিত করছে রিতিমত প্রচার করে। আর তা ছাড়া এটাকে সমাজ গঠন, বিভিন্ন গঠনমুলক কার্যপ্রনালী সম্পর্কে সকলের সাথে মত বিনিময়, নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিভা বিকাশ এবং পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সকলের সাথে মিলনের একটা বিশেষ সম্মেলন অঙ্গন হিসেবেও আমরা এটা ব্যবহার করতে পারি এতে কোন বিধি নিষেধ আরোপ করেনি। এখানেও তাই হচ্ছে আপনারা কে কোথায় আছেন তা কিন্তু আমি জানি না, কিন্তু তার পরেও দেখেন আমাদের মধ্যে কি সুন্দর একটা বন্ধন গড়ে উঠেছে।
সকলের কাছে আমার অনুরোধ যে যা জানেন তাই নিয়েই ব্লগ শুরু করুন, বিশেষ করে আমি মেয়েদের কাছে এই অনুরোধ জানাছি আরো একটু বেশি। কারন জাতি গঠনে আমাদের মেয়েদের ভুমিকাই প্রধান এজন্য আমরা গর্ব বোধ করতে পারি। শিক্ষিতা মা ছাড়া শিক্ষিত জাতি তৈরি হয় না একথা সবাই জানেন।
এই যে বাংলা হ্যাকস নামে এই ব্লগ যেখানে আপনাদের সাথে আমার পরিচয় এটা যে পরিচালনা করছে সেও কিন্তু আমার মতই একজন মেয়ে। আমি তার অনেক অনেক সমৃদ্ধি কামনা করি সাথে এও কামনা করি যেন আমাদের সকল বাঙ্গালির ঘরে ঘরে এমন গঠন মুলক ধ্যান ধারনা সমৃদ্ধা শান্ত শীতল মনের ধৈর্যশীলা মেয়ের জন্ম হয়। আশা করি আপনারাও আমার সাথে একমত পোষন করবেন।
আমি নিতান্তই আমার অবসর সময় কাজে লাগাবার জন্য আমার যে বিষয়ে সামান্য ধারনা রয়েছে তাই দিয়ে বিদেশে আমাদের যে সব ছেলেমেয়েরা থাকছে তাদের নিজে রান্না করে খাবার ব্যবস্থা কি ভাবে করা যায় তাই নিয়েই এই ব্লগিং শুরু করেছি। কখনোই আমি ভাবিনি যে এই পথে এমন একটা সুযোগ আসবে।
আমাদের বাংলা ভাষায় কথা বলা মানুষের সংখ্যা কিন্তু একেবারে কম নয়। আমাদের দেশ এবং আমাদের প্রতিবেশী ভারত মিলিয়ে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলছে। আমরা যখন বাংলায় কথা বলি তখন কিন্তু কেউ ভাবিনা যে কে বাংলাদেশী আর কে ভারতীয়, সবাই তখন বাঙ্গালী হয়ে যাই, কেমন করে যেন দেশের সীমারেখাটা সরে যায়। আর এই ভাষা কোন দুর্বল ভাষা নয় রীতিমত নোবেল পুরষ্কার পাওয়া ভাষা, এই ভাষা রক্ষার জন্য আমাদের রক্ত দিয়ে যুদ্ধ করতে হয়েছে যা পৃথিবীতে আর কোন ভাষার ক্ষেত্রে ঘটেনি। আজকের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারি এই বাংলাভাষীদের দিয়েই সুচিত হয়েছে। কাজেই এই বাংলা ভাষায় যথেস্ট উন্নত মানের ব্লগ করা সম্ভব। তাই বলছি আপনারা সকলেই এগিয়ে আসুন সবাইকে উতসাহিত করুন। এজন্য ঘরের বাইরে যাবার প্রয়োজন নেই, সারা দিনের মধ্যে কোন বিশেষ সময় নির্দিস্ট করার দরকার নেই, আপনার সুবিধা মত সংসারের সব কাজ কর্ম সেরে যে কোন অবসরে কিছুটা সময় দিলেই যথেষ্ঠ। তবে কথা হচ্ছে আপনি হয়তো ভাবছেন আমি কি বিষয় নিয়ে ব্লগ করবো কি লিখবো? গুগলের ব্লগের বিজ্ঞাপনে লক্ষ্য করলেই দেখবেন ওরা ওদের বিজ্ঞাপনে বলছে “আপনি যদি লিখতে পারেন তাহলে আপনি ব্লগ করতে পারবেন” তাহলে আর দেরি না করে এগিয়ে আসুন।
আপনারা যদি বলেন তাহলে আমি একটা ফর্ম করে দিতে পারি ওই ফর্ম পূরন করে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিলে আমরা বলে দিব আপনি কি নিয়ে লিখবেন, আমার পক্ষ থেকে আমি এটুক করতে পারি। আপনি সেলাই কাজ জানেন তাই নিয়ে করুন, যদি গান গাইতে জানেন তাই নিয়েই লিখুন, যদি ভালো সুন্দর করে ঘর সাজাতে পারেন তাই লিখুন, ফুলদানি সাজাতে পারেন তাই নিয়েই লিখুন, ছবি আকতে পারেন তাই একে দিন, ফুল বা শব্জী বাগান করতে পারেন তাই নিয়েই লিখুন। কিছুই পারেন না? অন্তত কোথাও বেড়াতে গেছেন সেখানে কি কি দেখলেন তাই লিখুন বা সংসারে আজকের অভিজ্ঞতা বা কি কি কাজ করলেন, কোন মেহমান এলো তাকে কি দিয়ে আপ্যায়ন করলেন, কি কি রান্না করলেন, বাড়ির কারো অসুস্থতায় কি কি ব্যবস্থা নিয়েছেন বা নিতে হয়েছে তাই লিখুন। দেখবেন আপনার ব্লগ চালু হয়ে গেছে। তবে একটা কথা, যে যাই করুন নিজেকে সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করুন। একটা কথাই শুধু মনে রাখবেন আমার এই লেখা অন্য আর এক জনে পড়ছে।
আর একটা কথা হোল কৌশলগত কথা যদি ভাবেন- তাহলে আমি এক কথায় বলবো এই 'বাংলা হ্যাকস' এ পর্যন্ত যা লিখেছে তার ২৫% অনুসরন করেই একটি সমৃদ্ধ ব্লগ পরিচালন করা সম্ভব। এর বেশিও যদি কিছু প্রয়োজন হয় তাহলে এখান থেকেই আপনি তা জেনে নিতে পারবেন। আমি যা দেখেছি তাতে আশা করি নিরাশ হবেন না। তবে আপনার যা একান্ত প্রয়োজন তা হোল ইন্টারনেট সংযোগসহ যেমন তেমন একটা কম্পিউটার।
আপনাদের মতামত কলামে আমি যাদের দেখেছি, বাদল রায়, স্বাধীন, শাহনাজ পারভীন, এসবি, শরিফুল ইসলাম, শুভব্রত, সবুজ, আব্বাস, লিন্ডা এবং আরোও কয়েকজন যারা নাম উল্লেখ করেননি, সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ সেলিব্রেট করতে চেয়েছেন। আমিও এ ব্যাপারে একমত। কবে, কি ভাবে, এবং কোথায় করতে চান সবাই যার যার মত একটা করে পরামর্শ দিন। আমি এব্যাপারে একটা প্রস্তাব দিতে চাইঃ- আমার মনে হয় ওই মেয়েটি দেশে আসার পর তাকে নিয়েই আমরা ব্লগিং সম্পর্কে একটা আলোচনা সভা করতে পারি। এখানে যারা ব্লগ করতে আগ্রহী এবং যারা ইতোমধ্যে এর সাথে জড়িয়ে আছেন তারা সবাই যোগ দিতে পারবে। আমরা সবাই সবার সাথে পরিচিত হতে পারবো। ঢাকাতেই কোথাও হতে পারে।আর এ ব্যাপারে নেতৃত্ব নেয়ার জন্য সমন্বয় কারী হিসেবে আমি বাংলা হ্যাকসের aR কেই অনুরোধ করবো, তবে আমি অবশ্যই তার পাশে থাকবো। আপনারা কি বলেন?
যে যেখান থেকে আমার বার্তা পড়লেন তাদের সবার কাছে সবিনয় অনুরোধ আপনার চেনা জানা সবার কাছে এই বার্তা পৌছে দিন।
সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এই শুভ কামনা সবার জন্য।
যে যেখানেই থাকুন সবাই আনন্দের সাথে ঈদ উদযাপন করুন, ঈদ মোবারক।
"রান্না বান্নার যত রকম http://rannakorinije.blogspot.com"