ওয়ার্ডপ্রেসের সেটিংস বাটন

এ কয়দিনে আমরা ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগের ড্যাশবোর্ড বা খেরোখাতার বিভিন্ন বাটন সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু তথ্য জেনেছি। আজকে আমরা ব্লগের বিভিন্ন সেটিংস কিভাবে পরিবর্তন করা যায় সেবিষয়ে আলোচনা করবো।

ব্লগের ড্যাশবোর্ডে (Dashboard) প্রবেশ করে ডানপার্শ্বের কর্ণারের দিকে তাকালে Settings লেখা দেখতে পাবেন। সেটিংস (Settings) লেখাটির উপরে ক্লিক (click) করলে উপরের ছবির মতো পেজ ওপেন হবে। এখানে আপনি বিভিন্নরকম বিষয়ের সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবেন। আপনি যা যা করতে পারবেন, সেগুলো হলো:
* General
* Writing
* Reading
* Discussion
* Privacy
* Delete Blog
* Media
* OpenID
* Domains
এর মধ্যে প্রথমে রয়েছে


(*) General: প্রাথমিকভাবে এটাই আপনার প্রধান সেটিংস এর বিষয়। এই জেনারেল অংশে আপনি আপনার ব্লগের নাম (Blog Title), ব্লগের বর্ণনা (Tagline), ভাষা (Language), আপনার ইমেইল এড্রেস (E-mail address), আঞ্চলিক সময় (Timezone), তারিখ দেখানোর পদ্ধতি (Date Format), সময় দেখানোর পদ্ধতি (Time Format), কি বারে সপ্তাহ শুরু হবে (Week Starts On) -- এসব পরিবর্তন করতে পারবেন।
# ইমেইল এড্রেস (Email Address) পরিবর্তন করার সময় মনে রাখতে হবে যে, আপনার দেয়া নতুন ইমেইল এড্রেস একটি কনফার্মেশন (Confirmation) চিঠি যাবে। সেই চিঠির একটিভ (Active) অংশে ক্লিক (Click) করে নতুন ইমেইল এড্রেসটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
# আঞ্চলিক সময় হলো আন্তর্জাতিক সময় (International Time Zone) বোঝানোর জন্য একটি পদ্ধতি। গ্রিনউইচ মিন টাইম (GMT) থেকে পৃথিবীর সবকটি দেশ নির্দিষ্ট কিছু সময় দূরত্বে অবস্থান করে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের সময় হলো ৬ ঘন্টা এগিয়ে। অতএব আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ব্লগিং করেন, তাহলে এই অংশে UTC+6 নির্বাচিত করতে হবে।
# প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো Save বাটনে ক্লিক করে সেভ করে নিতে হবে।

(*) Writing: এই অংশে আপনি ব্লগ লিখতে গিয়ে বেশ কিছু সুবিধা কিভাবে পাবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। যেমন: Size of the post box -এটা হলো পোস্ট লেখার যে বক্স তার আকার পরিমাপের জায়গা। ডিফল্ট হিসেবে ১০ দেয়া থাকে।
Formatting- এখানে ২টি অপশন (Option) আছে। কোন ইমোটিকন (Imoticon) টাইপ করলে তা ইমেজ/ গ্রাফিকস (Image/ Graphics) হিসেবে দেখাবে, নাকি টেক্সট (Text) হিসেবে দেখাবে তা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। এবং টাইপ (Type) করতে গিয়ে কোন ওয়ার্ডপ্রেস (Wordpress) সাপোর্ট (Support) করেনা এমন কোন কোড টাইপ করলে যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে (Automatic) তা ঠিক হয়ে যায়, তা নির্ধারণ করতে পারবেন।
Default Post Category- কোন পোস্ট লিখলে তা ডিফল্ট হিসেবে কোন বিভাগে যাবে তা এখান থেকে নির্ধারণ করুন।
Default Link Category- কোন লিংকের ডিফল্ট বিভাগ কি হবে তা এখান থেকে নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।

(*) Reading: আপনার ব্লগের পাঠকরা কিভাবে আপনার ব্লগটিকে পড়বে তা এখান থেকে পছন্দ করতে পারবেন।
Front page displays: আপনি ইচ্ছে করলে ওয়েব সাইটের (Web Site) মতো একটি মাত্র পেজকে (Page) ব্লগের প্রচ্ছদ (Cover) হিসেবে সিলেক্ট করতে পারেন। কিংবা ব্লগটিকেই প্রধান পেজ হিসেবে প্রদর্শন করতে পারেন।
Blog pages show at most: মোট কতটি পোস্টকে একবারে প্রথমে দেখাতে চান, তা নির্বাচন করতে পারবেন এখান থেকে।
অন্যান্যগুলোতে আপনার কিছু করার নেই। ডিফল্ট হিসেবে যা আছে, তাকে অবিকৃতভাবে রেখে দেয়াই শ্রেয়। তবে 'Encoding for pages and feeds' অংশে 'UTF-8' লেখা থাকতে হবে, যদি আপনি ব্লগটি বাংলাতে লিখে থাকেন।

(*) Discussion Settings: এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সেটিংস। এই অংশের কমান্ডগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগটি একাধিক নিরাপত্তা, উপযোগীতা ইত্যাদি ঠিক করে দিতে পারবেন।
Default article settings- এখানে তিনটি অপশন রয়েছে। সবকটি সিলেক্ট অবস্থায় থাকা উচিত।
প্রথমটির মাধ্যমে কোন ব্লগে যদি আপনার লেখাটির লিংক থাকে তা নিয়ে সতর্ক বার্তা প্রদর্শন করবে কি করবেনা তা নির্দিষ্ট করতে পারবেন।
দ্বিতীয়টির মাধ্যমে অন্য ব্লগ থেকে আপনার ব্লগের কোন পোস্টকে পিং (Ping) করবে কি না কিংবা কেউ আপনার পোস্টকে সূত্র হিসেবে (Trackback) ব্যবহার করেছে কি না তা জানানোর সুবিধাটা উন্মুক্ত রাখতে পারবেন।
তৃতীয়টির মাধ্যমে আপনার ব্লগে কেউ কোন মন্তব্য (Comment) করতে পারবে কি না তা ঠিক করতে পারবেন।
Other comment settings- এখানে অন্যের করা মন্তব্য নিয়ে আরও কিছু বিষয় নির্বাচন করতে পারবেন। যেমন:
# অন্যরা মন্তব্য করার সময় অবশ্যই নাম (Name) ও ইমেইল (Email Address) দিবে কি দিবে না।
# কাউকে মন্তব্য করার জন্য সদস্য হয়ে লগইন (Login) হতে হবে কি হবে না।
# এত দিনের পুরনো পোস্টে মন্তব্য করতে দেবেন কি দেবেন না-- এইসব বিষয় Other comment settings অংশ থেকে নির্বাচন করুন।
E-mail me whenever- এখানে ২টি অপশন রয়েছে। সাধারণভাবে দুটোই টিকচিহ্ন দেয়া থাকে।
প্রথমটি হলো: কেউ যদি আপনার পোস্টে মন্তব্য করে তাহলে আপনাকে ই মেইল করে জানাবে।
আর দ্বিতীয়টি হলো: কোন মন্তব্য যদি প্রকাশিত না হয়ে সম্পাদনার (Moderation) জন্য অপেক্ষমান থাকে তাহলেও আপনাকে ই মেইল করে জানানো হবে। দুটো অপশনই প্রয়োজনীয়। তাই দুটোতেই টিকচিহ্ন থাকা নিশ্চিত করুন।
Before a comment appears - কোন মন্তব্য প্রকাশিত হবার আগে ২ রকম নিয়ম ঠিক করতে পারবেন এই অংশ থেকে।
প্রথমত: কোন এডমিনিস্ট্রেটরের (Administrator) অনুমতি পাওয়ার পরই মন্তব্য প্রকাশিত হবে।
দ্বিতীয়ত: কারও আগে করা কোন মন্তব্য যদি আপনি প্রকাশ করে থাকেন, তাহলে তাকে বিশ্বাসী (Trust) মন্তব্যকারী হিসেবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনে করা হবে। আপনি নিজে যে নিয়মটি পছন্দ করেন, তা এখানে টিকচিহ্ন দিয়ে নির্বাচন করুন।
Comment Moderation- এই অংশটি আপনার ব্লগের নিরাপত্তা ও শালীনতা রক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোন স্প্যাম মন্তব্য এখান থেকে অনায়াসে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। সাধারণত পুরনো কোন পোস্টে স্প্যাম (Spam) মন্তব্য (Comment) থাকলে তা নিজে থেকে মুছে ফেলা (Delete) হয়। কিন্তু আপনি যদি Don’t discard spam on old posts লেখাটির বামপাশের টিকচিহ্নটি দিয়ে দেন, তাহলে তা আর হবে না। অর্থাৎ থেকে যাবে।
অনেক সময় অনেকে শুধুমাত্র নিজের ব্লগ বা কোন পণ্যের বিজ্ঞাপন (Advertise) করার জন্য আপনার ব্লগে মন্তব্য করতে পারে। সেটাও আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। কোন মন্তব্যতে ২টির বেশি (বা আপনার যা ইচ্ছা) লিংক থাকলে তাকে স্প্যাম মন্তব্য হিসেবে সন্দেহ করার সুবিধাটা এখান থেকে পেতে পারেন। কেউ যদি বারবার আপনার ব্লগে বাজে মন্তব্য করতে থাকে, তাহলে তার আইপি এড্রেস (IP Address), সেই বাজে শব্দ (Slang/ Adult word), নাম (name), ইমেইল (Email) ঠিকানা ইত্যাদি ফিল্টার (Filter) করুন এই Comment Moderation ও Comment Blacklist অংশ থেকে। নিচের ফাঁকা টেক্সট বক্সে আলাদা আলাদা লাইনে আপনার ফিল্টারকৃত শব্দ বা নাম বা আইপি এড্রেসগুলো লিখুন।
# মনে রাখতে হবে যে আপনি যে শব্দটাকে মন্তব্য হিসেবে অগ্রহণযোগ্য মনে করছেন, তা কোন বড় শব্দের অংশ হলেও তাকে ব্লক করা হবে ও মডারেশনের সারিতে ফেলে রাখা হবে। ধরি 'যৌন' শব্দটিকে আপনি ব্লক করেছেন। এখন যদি কেউ 'যৌনশিক্ষা' শব্দটি লিখে, তাহলে তাকেও আটকে ফেলা হবে।
মন্তব্য ঘরে অবতার দেখাবে কি দেখাবে না বা দেখালেও কেমন দেখাবে তা Avatars নামক অংশ থেকে নির্দিষ্ট করে দিতে পারবেন। অবতার কি এবং কেন ব্যবহার করা হয়, তা নিয়ে ভবিষ্যতে একটি পোস্ট লিখব এই প্রত্যাশা করি।

(*) Privacy: আপনার ব্লগটিকে কি আপনি শুধুমাত্র নিজের পছন্দের মানুষদেরকে দেখাতে চান নাকি বিশ্বের সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে চান তা এই Privacy অংশ থেকে সিলেক্ট করতে হবে। আপনি ৩৫ জনেরও বেশি বিশ্বাসী ব্যক্তিদেরকে এই ব্লগ নিভৃতে দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন।
আপনার ব্লগটিকে সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে সহজে যেন খুঁজে পাওয়া যায় কিংবা সার্চ ইঞ্জিনের তালিকায় যেন আপনার ব্লগ না থাকে, এমন দুটো সিদ্ধান্তের মধ্যে যে কোনটাকে বেছে নিতে পারবেন এই অংশ থেকে।

(*) Delete Blog: ব্লগিং করতে গিয়ে কোন এক সময়ে এমন হতে পারে যে আপনি আর আপনার ব্লগটিকে রাখতে চাচ্ছেন না। এরকমটা নানা কারণে হতে পারে। ভুল এড্রেস, এড্রেসের বানান ভুল, হুমকি, অনিচ্ছা ইত্যাদি কারণে হয়তো ব্লগটিকে আপনার মুছে ফেলতে হতে পারে। যদি শেষ পর্যন্ত ব্লগটিকে আপনার মুছে ফেলতে হয়, তাহলে তা করতে পারবেন এই * Delete Blog অংশ থেকে। মনে রাখবেন, এই ব্লগএড্রেসটি কিন্তু আর কারও জন্য উন্মুক্ত থাকবে না। যদি অলসতার কারণে আর ব্লগ লিখতে না ইচ্ছা করে, তাহলে ব্লগটি মোছার দরকার নেই। আপনার নেয়া সুন্দর ঠিকানাটি অন্য কেউ যদি নিতে চায়, তাহলে তা তাকে দিয়ে দিন। (কিভাবে দেবেন, তা পরবর্তিতে আলোচনা করবো।) কিন্তু ব্লগের নামটি যদি আপনার একান্ত ব্যক্তিগত হয়, তাহলে হয়তো আর কাউকে তা ব্যবহার করতে দিতে চাইবেন না। সেক্ষেত্রে "I'm sure I want to permanently disable my blog, and I am aware I can never get it back or use banglablogtips.wordpress.com again." পাশে টিক চিহ্ন দিয়ে 'Delete My Blog Permanently' লেখাটির উপরে ক্লিক করুন। আপনার ইমেইল এড্রেসে একটি কনফার্মেশন ই মেইল যাবে। সেখানে দেয়া কনফার্মেশন লিংকে ক্লিক করার পর আপনার ব্লগটি মুছে ফেলা হবে। এই ঠিকানা আর কেউ কখনও ব্যবহার করতে পারবে না।

(*) Media: আপনার ব্লগে যে মিডিয়াগুলো আছে অর্থাৎ ছবি, ভিডিও ইত্যাদি আছে তা কিভাবে প্রদর্শিত হবে তা নির্ধারণ করুন এই অপশন থেকে।

(*) Open ID: এখানে আপনি ওপেন আইডি ব্যবহার করে অন্য কোন ব্লগে নিয়মিত লগইন করতে পারবেন। এটা শুধুমাত্র মন্তব্য করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত (Use) হবে। কোন সাইটকে যদি আপনি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করেন, তাহলে তার নাম নিচের টেক্স বক্সে (Text Box) লিখে রাখুন।

(*) Domains: আপনার যদি নিজস্ব ডোমেইন থাকে, তাহলে তাকে এই ব্লগে রিডাইরেক্ট (Redirect) করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার আর আলাদা করে হোস্টিং কিনতে হবে না। Add a Domain লেখাটির ডানপাশের ফাঁকা জায়গায় আপনার নিজের ডোমেইন নাম লিখে Add domain to blog লেখা বাটনে ক্লিক করুন। এবং পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করুন।
 

পাঠকের প্রতিক্রিয়া

কিছু কথা

সফটওয়ার ও ওয়েবওয়ারের বিভিন্ন টিপ্‌স, টিউটোরিয়াল, হ্যাক্‌স, টেমপ্লেট বা থিম্‌স ইত্যাদি নিয়েই আমি ব্লগ লিখছি। আমার প্রধান আগ্রহ ব্লগিং টিপস। এছাড়াও প্রযুক্তির বিচিত্র বিষয় নিয়ে মত বিনিময়, সমস্যা ও তার সমাধান এবং আলোচনা করার জন্য এই ব্লগ খুলেছি। আশা করি আপনি নিরাশ হবেন না। এই ব্লগের সব লেখাগুলো যেকোন মিডিয়ায় এই লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশ করতে পারবেন। বিস্তারিত পড়ুন....

Search This Blog

© 2009-2014 Bangla Hacks | Design by: Bangla Hacks. Powered by: Blogger